বাংলাদেশের সবচেয়ে ভালো বেসরকারি চাকরি

 বাংলাদেশের সবচেয়ে ভালো বেসরকারি চাকরিঃ আসসলামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক । প্রত্যেকের মনেই একটি ইচ্ছে থাকে সম্মান জনক এবং উচ্চ আয়ের চাকরি পাওয়ার। কিন্তু সেই ইচ্ছে টা প্রত্যেকেন পূর্ণ হয় না।

বাংলাদেশের জব ইন্ডাস্ট্রিতে কোন দক্ষতা জন্য সর্বোচ্চ আয়ের ভালো চাকরির সুযোগ রয়েছে তা আমরা আজকের পোষ্টে মাধ্যেমে জানার চেষ্টা করবো। তো চলুন কথা না বাড়িয়ে মূল আলোচনায় আশা যাক-

বাংলাদেশের সবচেয়ে ভালো বেসরকারি চাকরি

বাংলাদেশের সবচেয়ে ভালো বেসরকারি চাকরি

বাংলাদেশের সবচেয়ে ভালো বেসরকারি চাকরির পোষ্টে প্রথমে যেটা নিয়ে কথা বলবো সেটা হলো হিউম্যান রির্সোস ইস্পেসালিষ্ট-

১। হিউম্যান রির্সোস স্পেশালিস্ট (Human Resource Specialist)

প্রাই প্রতিটি প্রতিষ্ঠানেই বিভিন্ন বিষয়ে কর্মীর প্রয়োজন হয়ে থাকে যাদের দ্বারা প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন কার্য পরিচালনা করা হয়। তাই মাঝারি থেকে বড় প্রতিষ্ঠান গুলো প্রচুর কর্মী নিয়োগ করে থাকে। 

আর সেই সমস্থ কর্মীদরে সঠিক ভাবে কার্য পরিচালানা করতে প্রতিষ্ঠান গুলোর  হিউম্যান রির্সোস স্পেশালিস্ট নামে একটি বিভাগ থাকে ।

আর এই বিভাগের কাজ হচ্ছে প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের সঠিক ভাবে ম্যানেজ করা। তাই ইন্ডাস্ট্রিগুলোতে হিউম্যান রির্সোস ইস্পেসালিষ্ট দের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। 

একজন হিউম্যান রির্সোস ইস্পেসালিষ্টে এর দায়িত্ব থাকে প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন বিভাগে নতুন কর্মী নিয়োগ করা বা কর্মী ছাটাই করা । 

কাজের প্রতি কর্মীদের কে আকৃষ্ট করতে বিভিন্ন ধরনের উদ্যেগ গ্রহন করা । পাশা পাশি কর্মীদের সাথে থেকে প্রতিষ্ঠানের হয়ে তাদের কাজের ধরন অনুযায়ী তাদের বেতন ভাতা, পদের উন্নতি  ও সুযোগ সুবিধা প্রদান করার মাধ্যমে কর্মীদের সন্তুষ্ট রাখা  এবং এই তথ্যগুলা সংরক্ষন করে প্রতিষ্ঠানে জমা দেওয়া ।

মুলত প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি বিভাগে অপারেশন গুলো যেন কর্মীদের দ্বারা যতযথ ভাবে পরিচালনা করতে পারে  এই বিষয়টি একজন হিউম্যান রির্সোস স্পেশালিস্ট এর লক্ষ রাখতে হয়। 

এক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই মাস্টার্স/এমবিএ মেজর-ইন-এইচআর ডিগ্রি অর্জন করত হবে। প্রতিষ্ঠান ভেদে এই পেশায় আয় এক এক রকম হয়ে থাকে । তবে একজন হিউম্যান রির্সোস স্পেশালিস্ট এর মাসিক বেতন ৩৫ থেকে ১ লক্ষ ৫০ হাজার প্লাস হয়ে থাকে ।

২। সাইভার সিকুরিটি স্পেশালিস্ট (Cyber Security Specialist)

প্রযুক্তির উন্নয়ের সাথে সাথে প্রতিনিয়ত মানুষ এখন ইন্টারনেট এর সাথে সম্পৃক্ত হচ্ছে  আর এই ইন্টানেটকে কেন্দ্রে করে গড়ে উঠছে বিভিন্ন টেকনোলজি ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান। 

যারা গ্রহকের জন্য তৈরি করছে বিভিন্ন ধরনের সফটওয়্যার এবং যার মাধ্যমে তারা গ্রহকে নানা সেবা প্রদান করছে। ইন্টারনেটে এখন যোগাযোগ থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষন, অনলাইন শপিং, আর্থিক লেনদেন সহ প্রায় সব কাজই মানুষ এখন অনলাইনে করতে পারে । 

আর এই গুলো মুলতো হয়ে থাকে বিভিন্ন ওয়েবসাইট এবং মোবাইল অ্যাপস এর মাধ্যমে । প্রতিনিয়ত হ্যাকারা সেই সফটওয়্যার ও ব্যবহার কারীদের তথ্য চুরি করে থাকে এবং বিভিন্ন অপরাধ মুলক কাজে সেগুলোকে ব্যবহার করার চেষ্ঠা চালাই।

তাই  গ্রাহকদের তথ্য এবং আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চত করতে প্রতিষ্ঠান গুলো সাইভার সিকুরিটি স্পেশালিস্ট দের নিয়োগ করে থাকে তাদের সফটওয়্যার গুলোর নিরাপত্তা নিশ্চত করতে ।

কারণ বিশ্বের কোনো টেকনোলজি সম্পুর্ণভাবে  নিরাপদ নয় । সাইভার সিকুরিটি স্পেশালিস্ট দের প্রধান কাজ হলো প্রতিষ্ঠানের হয়ে তাদের সফটওয়্যারের সিকুরিটি দূর্বল পয়েন্ট গুলো খুজে বের করে তার বুলেট প্রুব সিকুরিটি নিশ্চত করা । 

সময় মতো সফটওয়্যার সিকুরিটি পরীক্ষা করা ও আপগ্রাড করা ইত্যাদি। ইন্টারনেট ও টেকনোলজি বৃদ্ধির সাথে সাথে এই পেশাটির চাহিদা ও ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে । এই পেশাই নিযুক্ত হতে কম্পিউটার সাইন্স ডিগ্রীর পাশাপাশি কারিগরি দক্ষতাও থাকতে হবে । 

তবে ভালো অভিজ্ঞতা থাকলে কম্পিউটার সাইন্স ডিগ্রীর ছাড়াও প্রতিষ্ঠানগুলো নিযুক্ত করে থাকে । অভিজ্ঞতার উপর নির্ভর করে একজন সাইভার সিকুরিটি স্পেশালিস্ট এভারেজ মাসিক আয় বা বেতন ৪০ থেকে ১ লক্ষ ৬০ হাজার প্লাস হয়ে থাকে ।

৩। প্রজেক্ট ম্যানেজার (Project Manager)

উচ্চ পদ এবং সম্মানের আর একটি জব হচ্ছে প্রজেক্ট ম্যানেজার । প্রায় প্রতিটি ইন্ডাস্ট্রিতে প্রজেক্ট ম্যানেজার এর প্রয়োজন হয়ে থাকে । যেমন ধরুন একটি রিয়েলইস্টেট কোম্পানি বিভিন্ন ধরনের করপরেট এবং আবসিক স্থাপনা তৈরি করে থাকে । 

তাই প্রতিটি স্থাপনার জন্য একটি আলাদা প্রজেক্ট ম্যানেজার এর নিযুক্ত থাকে । একজন প্রজেক্ট ম্যানেজার কাজ হচ্ছে একটি স্থাপানার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সব কিছু পরিচালনা করা । 

তাকে ইঞ্জিনিয়ার ,কন্টাক্টর ,লেবার ,ম্যাটেরিয়াল  থেকে শুরু করে প্রায় সব কিছুর সাথে যোগাযোগ এবং সম্পর্ক ঠিক রাখতে হয় । যাতে করে প্রজেক্টি জেন যথা সময় সঠিক বাজেটের মধ্যে সম্পুর্ণ হতে পারে । 

প্রজেক্টে কোনো সমস্যা আসলে তা সমাধান করা,প্রজেক্টের টিম মেম্বারদের দিক নির্দেশনা দেওয়া এই সব কাজগুলোই প্রজেক্ট ম্যানেজার কে করতে হয় । এটা শুধু মাত্র একটা উদাহরণ মাত্র । 

এই ইন্ডাস্ট্রর মত অনান্য ইন্ডাস্ট্রিতেও  প্রজেক্টে ম্যানেজার এর প্রয়োজন হয় । যার জন্য এই পদটির অনেক চাহিদা রয়েছে । গবেষকদের তথ্য অনুযায়ী একজন প্রজেক্ট ম্যানেজার এর মাসিক আয় বা বেতন ৪০ হাজার টাকা থেকে ১ লক্ষ প্লাস হয়ে থাকে । যত বেশি অভিজ্ঞতা তত বেশি আয় ।

৪। ডিজিটাল মার্কেটিং ম্যানেজার (Marketing Manager)

একটি প্রতিষ্ঠানের সফলতার অধিকাংশেই মার্কেটিং এর উপর নির্ভর করে । তাই প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের একটি মার্কেটিং বিভাগ থাকে । এই বিভাগের  কাজ হচ্ছে কোম্পানির সেবা বা পন্যের প্রচার প্রচারণা করা । 

তাই প্রতিষ্ঠানগুলো দক্ষতা সম্পর্ণ মার্কেটিং ম্যানেজার দের উচ্চ বেতন নিয়োগ করে থাকে। ইন্টারনেটে প্রসার ঘটার সাথে সাথে ইন্টানেট কে কাজে লাগিয়ে মার্কেটিং (ডিজিটাল মার্কেটিং) এর নতুন একটি অবস্থান তৈরি হয়েছে । 

একটি সময় ছিল যখন প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের পন্য সেবা অফলাইন প্রচার প্রচারণা করতো । কিন্তু ইন্টারনেটের ব্যবহার মানুষের মাঝে বাড়ার সাথে সাথে ইন্টারনেটে মার্কেটিং এর চাহিদাও প্রচুর বাড়ছে যাকে ডিজিটাল মার্কেটিং ও বলা হয় । 

তাই এখন নতুন পুরাতন প্রতেকটি প্রতিষ্ঠানেই ডিজিটাল মার্কেটিং ম্যানেজারের প্রয়োজন হচ্ছে । একজন ডিজিটাল মার্কেটার এর কাজ হচ্ছে প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন পণ্য সেবাকে অনলাইন প্লাট ফরম এর মাধ্যমে প্রচার করা । 

যেমন ফেসবুক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম, গুগল ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের থার্ডপার্টি ওয়েব সাইট । গবেষক দের মতে একজন অভিজ্ঞ মার্কেটিং ম্যানেজার এর মাসিক বেতন বাৎসরিক ১৫ থেকে ২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

আরো পড়ুনঃ ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ার - সফল হওয়ার সেরা উপায়

৫। ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার (Electrical Engineering)

মানুষ ওতপ্রোত ভাবে ইলেকট্রনিক্স টেকনোলজির সাথে যুক্ত । প্রতিনিয়ত অনেক ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস মানুষ ব্যবহার করে থাকে । যেমন র্স্মাট ফোন, টেলিভিশন, ফ্রিজ, এসি ইত্যাদি । 

এছাড়াও মাঝারি থেকে বড় ইন্ডাস্ট্রিগুলো বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস ব্যবহার করে তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য। তাই ইন্ডাস্ট্রিগুলো তে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়াদের অনেক চাহিদা রয়েছে ।

শুধু মাত্র ইলেকট্রনিক্স পন্য তৈরি করা কারখানা গুলোতেই নয়  অন্য সব ইন্ডাস্ট্রিগুলো তেও যেই সব  টেকনোলজি ব্যবহার করা হয় তা সঠিক ভাবে পরিচলনা করার জন্য সেই সব প্রতিষ্ঠান গুলো ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগ করে থাকে । 

বিশ্ব বিদ্যালয় থেকে এই বিষয়ে ৪ থেকে ৫ বছরের ব্যাচেলর ডিগ্রী অর্জন করা যেতে পারে যেটাকে বলে ট্রিপলি (ইইই) যার মানে ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক্সি ইঞ্জিনিয়ারিং । ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার এর মূল কাজ হচ্ছে ইলেকট্রনিক্স সিস্টেম ডিজাইন এবং ডেভেলপ করা । 

তারা বিভিন্ন ধরনের টেকনোলজি নিয়ে কাজ করে থাকে। র্স্মাট ফোন থেকে শুরু করে সুপার কম্পিউটার টেলিকমিনিকেশন সিস্টেম ডিজাইন এবং ডেভলপ করে থাকে ফিজিক্স, ইলেকট্রিসিটি ম্যাথ মেট্রিক্স এর সমন্বয় । 

তবে শুধু ডিগ্রী দ্বারা এই পেশাই ভালো ফলাফল আশা করা যায় না। প্রতিষ্ঠান সেই সমস্ত ইঞ্জিনিয়ারদের উচ্চ বেতনে নিয়োগ করে থাকে যারা ক্রিটিক্যাল সমস্যা সমাধানের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের ইস্টাকচার ডিজাইন এবং ডেভেলপ করতে সক্ষম। 

তাদের মূল্য প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ লেভেলে থাকে । পে স্কেল এর তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশি একজন ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার এর মাসিক বেতন ৪৮ হাজার থেকে লক্ষাধিক হয়ে থাকে ।

আমাদের শেষ কথাঃ

আজকের আর্টিকেলে আমরা বাংলাদেশের সবচেয়ে ভালো বেসরকারি চাকরি মধ্যে ৫টির বিষয়ে আপনাদের জানানোর চেষ্টা করেছি। একট কথা না বললেই নয়, শুধু মাত্র অর্থ উপার্জনের উপর নির্ভর করে পেশা পছন্দ না করাই ভালো । 

কেন না জীবন অর্থের থেকেও অনেক মূল্যবান । যে কাজ করতে আপনার ভালো লাগে সেটাই করতে থাকুন । এমন কী তাতে যদি আয় কমও হয় কিন্তু আপনি সেই কাজ করে তৃপ্তি পাবেন । 

জীবন কে আনন্দের সাথে উপভোগ করুন । সফলতা মানেই অনেক অর্থ উপার্জন নয় । জীবন টাকে নিজের মত করে কাটানোর মধ্যেই সর্বোচ্চ আনন্দ লুকিয়ে রয়েছে । আল্লাহ্ হাফেজ।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url